ইসরায় নবীজির দর্শন
নাঈম হোসেন
ইসরায় নবীজির দর্শন
কী পাপে কী শাস্তি
তা করা হল বর্নণ
আল্লাহর নবী ইসরায় গেল
কী পাপে কী শাস্তি
সেখানে দেখতে পেল
একেক পাপের একেক শাস্তি
নবী দিয়েছে বর্নণ
জানলে মানবের শরীর হবে শিহরণ
বেনামাজির শাস্তি
নবীজি কি ভয়ংকর দেখছেন,
আযাবের ফেরেশতাদের দেখলেন,
প্রকট পাথর দিয়ে
অপরাধীদের মাথায়
আঘাত করছেন।
আঘাতে মাথা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে,
পুনরায় ভালো হয়ে যাচ্ছে,
আবার আঘাত করা হচ্ছে
এভাবে রাত-দিন বছরের পর বছর কাটছে।
তাই কবি বলেন,
নামাজের প্রতি হতে হবে সচেতন
সময় থাকতে কর সবে নামাজের যতন।
জাকাত না দেওয়ার শাস্তি
নবীজি কী নির্মম দেখলেন,
তাদের সম্মুখে ও পশ্চাতে পাওনাদাররা থাকবে
তারা পশুবৎ চরবে
নোংরা আবর্জনা ময়লা ও পুঁজ খাবে
কাঁটাযুক্ত আঠালো বিষাক্ত ফল খাবে,
জাহান্নামের উত্তপ্ত পাথর ভক্ষণ করবে।
তাই কবির উপদেশ হবে
শোন মানব সবে
যাকাত ফরজ হলে তা দিয়ে দিবে
ভয়ঙ্কর আযাব থেকে তবে মুক্তি পাবে।
চোগলখোরের শাস্তি
নবীজি কী লোমহর্ষক দেখলেন,
তাদের পার্শ্বদেশ হতে
গোশত কেটে তাদের খাওয়ানো হচ্ছে;
আর বলা হচ্ছে,
যেভাবে তোমার ভাইয়ের গোশত খেতে,
সেভাবে এটা হবে খেতে।
চোগলখোরী হতে তাই
দূরে থাক মুসলিম ভাই
এ ভয়ানক আযাব হতে তবে
রেহাই পাবে সবে।
গিবতকারীদের শাস্তি
নবীজি অনুরূপ দেখলেন
তাদের অগ্নিময় লোহার নখর দ্বারা
তাদের চেহারা ,বক্ষ বিদীর্ণ করছে নিজেরা।
নবীজি ভারাকান্ত হয়ে জানতে চাইলেন
হে ভাই জিবরাইল এরা কারা?
জিবরাইল উত্তর দিলেন
এরা হচ্ছে সেসব লোক যারা
পশ্চাতে মানুষের সমালোচনা করতেন।
কবি উপদেশ ছলে বলেন তাই,
মানুষের পিছনে সমালোচনা হতে ভাই
দূরে থাক মুসলিম সবাই।
সুদখোরদের শাস্তি
নবীজি দেখলেন
তাদের বড় পেটের মধ্যে
অসংখ্য সাপ কিলবিল করছে
ফেরাউন সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে রয়েছে
তাদেরকে অগ্নিতে প্রবিষ্ট করানো হচ্ছে।
তাই আল্লাহ ব্যবসা হালাল করছে
আর সুদকে হারাম ঘোষণা দিচ্ছে।
তাই আসুন মুসলিম সুদকে না বলি
আল্লাহর আইন মেনে চলি।
জেনাকার ও বদকার নারী,
যারা করেছে স্ব-ইচ্ছায় ব্যভিচারী
ভ্রূণ ও সন্তান হত্যা করেছে
নবীজি মেরাজে তাদের দেখলেন
পায়ে আংটা লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে;
তারা আর্তচিৎকার করছে।
জেনাকার পুরুষের শাস্তি
নবীজি কী ভয়ঙ্কর দেখলেন।
এক সম্প্রদায়ের সামনে দেখলেন
একটি উত্তম পাত্রে তাজা ভুনা গোশত
অন্য নোংরা একটি পাত্রে পচা গোশত
তারা উত্তম পাত্রের উন্নত তাজা সুস্বাদু গোশত রেখে
নোংরা পাত্রের পচা মাংস ভক্ষণ করছে।
নবীজি জানতে চাইলেন
হে জিবরাইল এরা কারা?
জিবরাইল উত্তর দিলেন
এরা হলো ওই সব পুরুষ যারা
স্বীয় বৈধ স্ত্রী রেখে অন্য নারীর কাছে গমন করেছে
এবং ওই সব নারী যারা
স্বীয় বৈধ স্বামী রেখে পরপুরুষগামিনী হয়েছে।
দেখলেন এক লোক বিশাল লাকড়ির বোঝা একত্র করেছে,
যা সে ওঠাতে পারছে না তবু উঠাতে চেষ্টা করছে
তবু আরও লাকড়ি তাতে বৃদ্ধি করছে
নবীজি জিজ্ঞেস করলেন
হে ভাই জিবরাইল এটা কী?
জিবরাঈল উত্তরে বললেন,
এ হলো আপনার উম্মতের সে ব্যক্তি
যে মানুষের আমানত আদায় করেনি;
বরং আরও অধিক গ্রহণ করেছে।
নবীজি আরও দেখলেন
অশ্লীল বাক্য ব্যবহারকারী
ও ফেতনা সৃষ্টিকারী
তাদের শাস্তি হচ্ছে
জিহ্বা ও ঠোঁট অগ্নির লোহার কাঁচি দিয়ে কর্তন করা হচ্ছে,
পুনরায় তা আগের মতো হয়ে যাচ্ছে
আবার তা কাটা হচ্ছে;
এভাবেই চলছে।
এরপর নবীজি দেখলেন
ছোট্ট একটি পাথর হতে
বিশাল এক ষাঁড় বের হলো;
পুনরায় ওই ষাঁড় সে পাথরের ভেতর প্রবেশ করতে
চেষ্টা করছিল;
কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছিল না।
নবীজি বললেন,
হে ভাই জিবরাইল এটা কী?
জিবরাঈল জবাবে বললেন,
এটা হলো সেসব লোকের উদাহরণ
যারা দাম্ভিকতাপূর্ণ কথা বলে বেড়ায়
যার জন্য পরে লজ্জিত হয়,
কিন্তু পরে আর তা ফিরিয়ে নিতে পারে না।
এটা তাদের অপরাধের উপমা
যা আল্লাহ করেননি ক্ষমা
এতিমের সম্পদ আত্মসাৎকারীদের দেখলেন।
তাদের ওষ্ঠ-অধর যেন
উটের ঠোঁটের মত।
যার ভয়ংকর দৃশ্য নয় বলার মত
তাদের মুখে আগুনের জ্বলন্ত কয়লা প্রবেশ করানো হচ্ছে
এবং তা তাদের পায়ুপথ দিয়ে বের হয়ে আসছে।
এরপর নবীজি মদ, ও নেশা গ্রহণকারীদের শাস্তি দেখলেন।
তারা জাহান্নামিদের শরীর থেকে
নির্গত বিষাক্ত নোংরা পুঁজ পান করছে।
আসুন মুসলিম সবে
মাদককে না বলি এমন পুঁজ পান থেকে
বেঁচে যাবে তবে।
এরপর নবীজি দেখলেন
মালিক নামে জাহান্নামের রক্ষী ফেরেশতাকে
মুখে হাসি নেই, আছেন মলিন মুখে
বলা হলো নবীজিকে
জাহান্নাম সৃষ্টির পর থেকে
সে কখনো হাসেনি দুশ্চিন্তায় থাকে
থাকে মলিন মুখে।
যা বলছি সব বাণী সত্য
বুখারি ও মুসলিম শরীফে তা আছে বর্ণিত।
সমাপ্ত।।
রচনাকালঃ ১ মার্চ ২০২২ইং
স্থানঃ লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব হলরুমে বসে।
সময় দুপুর ১২:২৫।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : কপিরাইট সংরক্ষিত ৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন